লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে একটি তাফসিরুল কুরআন মাহফিল এবং ইসলামী সংগীত সন্ধ্যার আয়োজন স্থগিত হয়ে যাওয়ার পেছনে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দ্বন্দ্ব জোরালোভাবে প্রকাশ পেয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) এই মাহফিলটি আলমগীর কমিশনারের বাড়ির সামনে মোহাম্মদিয়া জামে মসজিদের মাঠে বিকেল ৩টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে আয়োজকরা অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতা এবং সাবেক কাউন্সিলর আলমগীর হোসেনের বাধার কারণে মাহফিল স্থগিত করতে বাধ্য হন তারা।
আয়োজকদের ভাষ্যমতে, মাহফিলের প্রধান অতিথি হিসেবে জামায়াত নেতা ড. রেজাউল করিমকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এ নিয়েই বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীতে আয়োজকদের পক্ষে মাহফিল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মূলত স্থানীয় জামাত এবং বিএনপির সভাপতি দ্বন্দ্বের কারণে বিষয়টি জটিল হয়েছে।
এ্যানি চৌধুরী তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে স্পষ্ট করে জানান, মাহফিল স্থগিতের ঘটনাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তিনি লেখেন, “লক্ষ্মীপুরে একটি মাহফিল আমাকে দাওয়াত না করায় বন্ধ হয়েছে—এমন মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়েছে। এটি আমার সম্মানহানি করার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি ষড়যন্ত্র।”
অন্যদিকে, জামায়াত নেতা ড. রেজাউল করিম তার ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, এই মাহফিলে আমাকে প্রধান অতিথি করা হয়েছে সে সম্পর্কে আমি অবহিত ছিলাম না। বরং মাহফিলের মেহমান হিসেবে উপস্থিত থাকার দাওয়াত পেয়েছি। কিন্তু পূর্ব নির্ধারিত ব্যস্ততার কারণে তিনি মাহফিলে উপস্থিত হতে পারবেন না বলে আয়োজকদের আগেই জানিয়েছিলেন।
মাহফিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় উভয় নেতার ফেসবুক পোস্টে দেওয়া বক্তব্যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়। এ্যানি চৌধুরী দাবি করেন, মাহফিল সম্পর্কে তিনি অবগত ছিলেন না। অপরদিকে, রেজাউল করিম মনে করেন, “কোরআন মাহফিল বন্ধ হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক এবং এ ধরণের বিভক্তি ইসলামের ক্ষতি সাধন করে।”
এ ঘটনায় স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, কোরআনের মাহফিল রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে বন্ধ হওয়া উচিত নয়। আয়োজক কমিটির একজন সদস্য বলেন, “মাহফিলটি সফল করতে আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এমন একটি ঘটনার কারণে আমাদের কষ্ট বৃথা গেল।” বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের বিতর্ক এড়ানোর জন্য স্থানীয় রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো প্রয়োজন।