শুক্রবার- ১১ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জামায়াতের ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীর গন্ডগোলের চেষ্টা: হাতেনাতে ধরতে গিয়ে উত্তেজনা

জামায়াতের শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীর গন্ডগোলের চেষ্টা: হাতেনাতে ধরতে গিয়ে উত্তেজনা
ছবিঃ সংগৃহীত

নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী নেতাকর্মীরা ঈদ উপলক্ষে স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরের পিএস শরীফ, যিনি দীর্ঘদিন ধরে নানা অপকর্মের জন্য কুখ্যাত, বিএনপির কিছু কর্মীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে জামায়াতের গণসংযোগে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, শরীফ বিএনপির কিছু নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে জামায়াতের কর্মসূচির মধ্যে অনুপ্রবেশ করে এবং কয়েকজন জিয়ার সৈনিক বলে চিৎকার করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। জামায়াতের কর্মীরা বাধা দিলে স্থানীয় বিএনপির পারভেজ ও রতনসহ কয়েকজন তাকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেয়। তবে সন্দেহ করা হচ্ছে, পারভেজ ও রতন দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের জন্য গোপনে আশ্রয়-প্রশ্রয়ের বাণিজ্য পরিচালনা করছে। বিএনপির ভেতরে থেকেই তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করছে, বলে অভিযোগ রয়েছে।

এই ঘটনার পর জামায়াত কর্মীরা আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের শেল্টার দেওয়ার প্রতিবাদে স্লোগান দিতে থাকেন। বিএনপির একটি অংশও সেখানে উপস্থিত হয়ে পাল্টা স্লোগান দিতে শুরু করে। ফলে বিএনপি ও জামায়াতের কর্মীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, হাতাহাতি এবং ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এতে পুরো বাজার এলাকা উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে।

জামায়াত কর্মী মিলন বলেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এখনো বিচারের আওতায় আসেনি। তার ওপর বিএনপির কিছু অসৎ নেতাকর্মী টাকার বিনিময়ে তাদের সঙ্গে লিয়াজো করে বেড়াচ্ছে। এটা তাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনার বিপরীত। গত ১৭ বছর এ অঞ্চলে জামায়াত ইসলামী এবং বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃবৃন্দ ত্যাগ স্বীকার করেছেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আমাদের ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। এতো নির্যাতনের পরেও যারা আওয়ামী সন্ত্রাসীদেরকে পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে তারাও আজ স্বৈরাচার।

একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি নেতা বলেন, বিএনপির কিছু অসাধু নেতার কারণে আমাদের সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তাদের কারণে আজকে তৃণমূলের কর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত। চলমান কমিটি গঠনেও এসবের প্রভাব পড়েছে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজপথে থাকা একজন কর্মী বলেন, বর্তমানে বিএনপির অবস্থা আওয়ামী লীগের চেয়েও খারাপ হবে যদি তারা নিজেদের সংশোধন না করে। জনগণই তাদের উচিত শিক্ষা দেবে। তিনি আরো বলেন ৫ ই আগস্ট এর পূর্বে এখনকার বিএনপি’র অনেক নেতা রয়েছে যাদেরকে আন্দোলন সংগ্রামে দেখা যায়নি, কিন্তু এখন বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে অবাধে নানা ধরনের অপরাধ করছে।

বাজারের এক ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একসময় আওয়ামী লীগ বাজারে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল, এখন বিএনপির কিছু নেতা সেই একই পথ অনুসরণ করছে। আওয়ামী লীগের লুটেরাদের সঙ্গে মিলে তারা বাজারের পরিবেশ অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। এটি সাধারণ মানুষের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই ঘটনার সময় পুলিশের উপস্থিতি ছিল নামমাত্র, যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট ছিল না। তবে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। সেনাবাহিনীর অনুরোধে জামায়াতের ইউনিয়ন আমির কর্মীদের স্থান ত্যাগের নির্দেশ দিলে তারা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়। বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সাধারণ জনগণের দাবি, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার নামে বিএনপির কিছু নেতা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে, যা ভবিষ্যতে দলটির জন্য বড় সংকট ডেকে আনতে পারে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে।

আরও পড়ুন

সম্পর্কিত আরো খবর

জনপ্রিয়