
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) প্রশাসন ক্যাম্পাসে সকল ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করেছে। একইসঙ্গে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে সিন্ডিকেট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের সভাপতিত্বে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিন্ডিকেট বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। পাশাপাশি, কোনো শিক্ষার্থী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হলে তদন্ত সাপেক্ষে তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে।
সম্প্রতি ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যেখানে অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যখন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেয়। একইসঙ্গে, তারা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া, বহিরাগত যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধকরণের দাবি জানায়। একইসঙ্গে, সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি, উপাচার্য, প্রো-ভিসি ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগের দাবি জানানো হয়। বুধবার দুপুর ১টার মধ্যে তাদের দাবি না মানা হলে, ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। আন্দোলনকারীরা সেখানে গিয়েও তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে, মঙ্গলবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে আন্দোলন এখনো অব্যাহত রয়েছে।