
মনোহরগঞ্জ, কুমিল্লা, ৫ আগস্ট: পুলিশের এসআই (সাব-ইন্সপেক্টর) নীরব হোসেনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে অভিযুক্ত এই পুলিশ কর্মকর্তা মনোহরগঞ্জ থানাধীন নাথেরপেটুয়া ফাঁড়ির প্রধান ছিলেন। জনতার তীব্র প্রতিরোধের মুখে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এসআই নীরব হোসেন নাথেরপেটুয়া ফাঁড়ির দায়িত্ব নেন। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিচালিত ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এর সময় জনতা তার বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ তুলে ফাঁড়ি থানার সামনে বিক্ষোভ করে। ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এসআই নীরব হোসেনকে উদ্ধার করে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়।
নীরব হোসেনের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ২০১৬ সালে সংঘটিত দুটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। দুটি মামলায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা আবুজর গিফারী ও শামীম হোসেনকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে কালীগঞ্জ আমলী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিহতদের পরিবার পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে।
কালীগঞ্জ আমলী আদালতের বিচারক রোমানা আফরোজ মামলা দুটি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে অভিযোগ এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। দুটি মামলার অন্যতম অভিযুক্ত এসআই নীরব হোসেনসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মামলার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ১৮ মার্চ জুমার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ঝিনাইদহের চাপালী লস্কারপাড়া থেকে আবুজর গিফারীকে সাদা পোশাকধারীরা জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। পরে ১৩ এপ্রিল যশোর সদরের লাউখালি গ্রামের একটি শ্মশানঘাট থেকে তার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
একইভাবে, ২৪ মার্চ বিকেলে শহরের মাহতাব উদ্দিন কলেজ এলাকা থেকে শামীম হোসেনকে অপহরণ করা হয়। ১৮ দিন পর, ১৩ এপ্রিল, যশোর সদরের একই স্থানে তার লাশ পাওয়া যায়।
সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, এলাকাবাসী এখনো ফাঁড়ি থানা ঘেরাও করে রেখেছে এবং অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছে। তারা দাবি তুলেছে যে, স্বৈরাচারের দোসররা যারা এখনো এলাকায় সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত রয়েছে, তাদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
মনোহরগঞ্জ থানা ওসি বিপুল চন্দ্র দে জানিয়েছেন, নীরব হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে