শনিবার- ৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ডেথ উইশ পর্ব-২

ডেথ উইশ অনুবাদ গল্প
অনুবাদ গল্প

লোকটি কিছুক্ষণ কিছু বলল না, তারপর সিগারেটটি রেলিংয়ের ওপার ফেলে দিল এবং সেটা পানিতে পড়তে দেখল। সে পুলিশের দিকে ফিরে দাঁড়াল। ‘আমার নাম এডওয়ার্ড রাইট। আমি মনে করি না যে আজ আমি এটা করতাম।’
‘আপনার কোনো বিশেষ সমস্যা কি আছে?’ পুলিশটি জিজ্ঞাসা করল।

‘না… বিশেষ কিছু না।’

‘ডাক্তার দেখেছেন? এতে সাহায্য পেতে পারেন।’

‘তাই বলে।’

‘এক কাপ কফি খেতে চান?’ পুলিশটি বলল।

লোকটি কিছু বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু মত পাল্টাল। সে আরেকটা সিগারেট জ্বালাল এবং ধোঁয়ার একটি মেঘ ছাড়ল। ‘এখন ঠিক আছি,’ সে বলল। ‘বাড়ি গিয়ে একটু ঘুমাবো। স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে ভালো ঘুম হচ্ছে না।’

‘ওহ,’ পুলিশটি বলল।

‘সে মারা গেছে। সে ছিল আমার সবকিছু।’

পুলিশটি তার কাঁধে হাত রাখল। ‘আপনি ঠিক হয়ে উঠবেন, মি. রাইট। হয়ত ভাবছেন যে এটা কাটিয়ে উঠতে পারবেন না, যে কিছুই আগের মতো হবে না, কিন্তু—’’আমি বরং বাড়ি যাবো,’ লোকটি বলল। ‘দুঃখিত, ঝামেলা করেছি। আরাম করার চেষ্টা করব, ঠিক হয়ে যাবো।’

পুলিশটি তার চলে যাওয়া দেখতে দেখতে ভাবল যে, লোকটিকে কি পুলিশের স্টেশনে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু যদি সবাইকে আত্মহত্যার চিন্তা করার জন্য থানায় আনা শুরু করা হয়, তাহলে সেটা শেষ হবে না। সে সেতুর অন্য পাশে ফিরে গেল। যখন সে পৌঁছল, তখন নোটবুক বের করে নাম লিখল, “এডওয়ার্ড রাইট”। যাতে লোকটির অর্থটা মনে থাকে, তার পাশে লিখল, “বড় ভ্রু, স্ত্রী মারা গেছে, লাফানোর চিন্তা করেছে।”

সাইকিয়াট্রিস্ট তার সুচালো দাড়ি বুলিয়ে রোগীর দিকে তাকিয়ে ছিল।

… জীবনের আর কোনো মূল্য নেই,” লোকটি বলছিল। “গতরাতে প্রায় নিজেকে শেষ করে দিচ্ছিলাম। প্রায় মরিসি ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দিতে যাচ্ছিলাম।”

তারপর?”

“একজন পুলিশ চলে এল। যাই হোক, আমি লাফ দিতাম না।”

“কেন?”

“জানি না।

অবিরাম রোগী ও ডাক্তারের কথোপকথন চলতে থাকল। মাঝে মাঝে ডাক্তার একটি ঘণ্টা কাটিয়ে দিত ভাবনা ছাড়া, শুধু স্বাভাবিকভাবে জবাব দিত কিন্তু আসলে কোনো কথাই শুনত না। সে ভাবল, আমার কি সত্যিই এদের কোনো উপকার হচ্ছে? হয়ত এরা শুধু কথা বলতে চায়, আর একজন শ্রোতার প্রয়োজন হয়।

তারপর সে একটি স্বপ্নের কথা শুনছিল। তার প্রায় সব রোগীই তাকে তাদের স্বপ্নের কথা বলত, যা সাইকিয়াট্রিস্টের বিরক্তির কারণ ছিল, কারণ সে নিজে কখনো কোনো স্বপ্ন মনে করতে পারত না। সে এই স্বপ্ন শুনছিল, মাঝে মাঝে ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছিল আর ভাবছিল কখন ঘণ্টাটা শেষ হবে। সে জানত যে স্বপ্নটি একজনের মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষাকে বোঝায়, একটি মৃত্যু ইচ্ছার বিকাশ, আর আত্মহত্যার প্রবণতা যা কেবল ভয়ে আটকে আছে। কিন্তু আর কতদিন?

আরেকটি স্বপ্নের গল্প। সাইকিয়াট্রিস্ট চোখ বন্ধ করল এবং শোনার চেষ্টা বন্ধ করে দিল। পাঁচ মিনিট বাকি আছে, সে নিজেকে বলল, তারপর এই মূর্খটা চলে যাবে।

চলবে…..
গত পর্ব – ১:
সর্বশেষ পর্ব 

আরও পড়ুন

সম্পর্কিত আরো খবর

জনপ্রিয়