তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে সোমবার দিনব্যাপী সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। এ সময় রাজধানীর মহাখালী এলাকার সড়ক এবং রেলপথে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এ আন্দোলনের কারণে সাধারণ মানুষ ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে তিতুমীর কলেজকে পৃথক করা। কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের জন্য একটি কমিশন গঠন। স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরি। সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা কলেজ চত্বরে জড়ো হন। পরে মিছিল নিয়ে মহাখালী আমতলী মোড় হয়ে লেভেলক্রসিংয়ে অবস্থান নেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলন তীব্র হয়, যা বিকাল পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।
আন্দোলনের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা চলন্ত ট্রেন উপকূল এক্সপ্রেসে ঢিল ছোড়ে। এতে জানালার কাঁচ ভেঙে যাত্রীদের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্র জানায়, আহতদের মধ্যে শিশুসহ অর্ধশতাধিক যাত্রী রয়েছেন। হামলার ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কমলাপুর রেলস্টেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটে এবং যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
বিকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। তবে দাবি পূরণের কোনো সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পাওয়ায় রাতেই সচিবালয়ের করিডোরে অনশন শুরু করেন ১৪ জন শিক্ষার্থী। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে এবং কলেজের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
আন্দোলনের কারণে মহাখালী, বনানী, গুলশানসহ আশপাশের এলাকায় যানজট চরমে পৌঁছায়। পথচারীদের অনেককেই দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়েছে। একজন যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের দুর্ভোগ দিয়ে যদি সমস্যার সমাধান হয়, তবে শিক্ষার্থীরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করুক। কিন্তু এভাবে রাস্তাঘাট বন্ধ করা উচিত নয়।”
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এবং সেনাবাহিনী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বারবার আলোচনা করে অবরোধ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলেও শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অনড় ছিলেন। বিকাল ৪টার দিকে আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত হলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তবে সন্ধ্যায় আবারও শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন।