বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন বিনিয়োগকারী ও স্ন্যাপচ্যাটের সাবেক প্রধান কৌশলগত কর্মকর্তা (সিএসও) ইমরান খান। নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় শনিবার অনুষ্ঠিত এই সাক্ষাৎকালে ইমরান খান বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

৪৮ বছর বয়সী ইমরান খান ১৮ বছর বয়সে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। জেপি মরগান ও ক্রেডিট সুইসের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনিয়োগ ব্যাংকার হিসেবে অভিজ্ঞতা অর্জনের পর তিনি আলেফ হোল্ডিং-এর বোর্ড চেয়ারম্যান হন। ইমরান খান আলিবাবার রেকর্ড ভাঙা আইপিও-তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং স্ন্যাপচ্যাটে সিএসও হিসেবে সংক্ষিপ্ত সময়ে কোম্পানির মূল্য শূন্য থেকে ৭২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করেন।

সাক্ষাৎকালে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে দ্রুত বর্ধনশীল ফিনটেক, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগের আহ্বান জানান। ইমরান খান বলেন, দারিদ্র্য দূরীকরণে আপনার আজীবন মিশন আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। এখনই মাতৃভূমিতে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়। তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে যোগ করেন, আমি আপনার কাজের একজন বড় ভক্ত। আপনি আমাদের জাতীয় গর্ব।

ইমরান খান জানান, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং বর্তমান নিয়ন্ত্রক পরিবেশ বিনিয়োগের জন্য আরও সহায়ক। তিনি ফিনটেক খাতে দ্রুত বিকাশের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী এবং সঠিক সুযোগ তৈরি হলে বিনিয়োগের আশ্বাস দেন।

২০১৮ সালে ইমরান খান প্রাইম অ্যাসেট নামে একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন, যা প্রযুক্তি-নির্ভর রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাওয়া খাতে বিশেষভাবে বিনিয়োগ করে। তার পোর্টফোলিওতে পেমেন্টস ও ডিজিটাল অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাত অন্তর্ভুক্ত।

অধ্যাপক ইউনূস ইমরান খানের আগামি সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান, যাতে তিনি সরাসরি বিনিয়োগের সম্ভাবনা মূল্যায়ন করতে পারেন। ইমরান খান জানান, তিনি আগামী মাসগুলোতে সফরের পরিকল্পনা করছেন।

সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের প্রতি মোট বিনিয়োগের এক শতাংশ সামাজিক ব্যবসায় ব্যয় করার বা একটি সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের প্রস্তাব দেন, যা ইমরান খান স্বাগত জানান এবং ভবিষ্যতে এতে সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।