এইবারের নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করা হবে আগামী শুক্রবার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুরস্কার জয়ের আশা করছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করছেন, তিনি এই পুরস্কারের যোগ্য, কারণ ক্ষমতায় আসার পর তিনি সাতটি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন।
ট্রাম্পের দাবি
ট্রাম্প জানান, ২০১৭ সালে তিনি ক্ষমতায় আসার পর ইসরায়েল-ইরান, রুয়ান্ডা-কঙ্গো, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান, থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া, ভারত-পাকিস্তান, মিশর-ইথিওপিয়া ও সার্বিয়া-কসোভো সংঘাতের অবসান ঘটিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারলে এটি হবে তার ‘অষ্টম শান্তি উদ্যোগ’। এক সামরিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, কেউ কখনো এমন কিছু করতে পারেনি। হয়তো আমি পুরস্কার পাব না, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি এটি অপমান হবে।
বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের নোবেল জয়ের সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ নোবেল কমিটি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি ও বহুপাক্ষিক শান্তি প্রচেষ্টাকে অগ্রাধিকার দেয়, অল্পকালীন কূটনৈতিক সাফল্য নয়।
থিও জেনু (হেনরি জ্যাকসন সোসাইটি) বলেন, সংঘাত সাময়িকভাবে থেমে যাওয়া আর স্থায়ী সমাধান এক নয়। ট্রাম্পের উদ্যোগ এখনো টেকসই প্রমাণিত হয়নি।
ক্রিস্টিন সানডভিক (অসলোভিত্তিক পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট) বলেন, তিনি শান্তি নিয়ে কথা বলেছেন ঠিকই, কিন্তু স্থায়ী ফলাফল সময়ই দেখাবে।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ট্রাম্পের অবহেলা তার নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনা কমিয়েছে। জেনু মন্তব্য করেছেন, যিনি জলবায়ু পরিবর্তনের অস্তিত্বই অস্বীকার করেন, তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া অসম্ভব।
মনোনয়ন প্রক্রিয়া ২০১৮ সাল থেকে কয়েকজন দেশি ও বিদেশি রাজনীতিক ট্রাম্পকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন। এ বছরের মধ্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপত্র দিয়েছেন। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই মনোনয়নকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, কারণ ট্রাম্পের শান্তি উদ্যোগের বেশিরভাগ দাবির প্রমাণ যাচাইযোগ্য নয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নোবেল কমিটি এবারও এমন কাউকেই পুরস্কৃত করবে, যিনি দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং মানবতার কল্যাণে প্রকৃত অবদান রেখেছেন।