রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা ও প্রতিরক্ষা জোরদারের লক্ষ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও বড় ধরনের অস্ত্র ও ড্রোন চুক্তি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য শিগগিরই ওয়াশিংটন সফরে যাবেন দেশটির কর্মকর্তারা। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এই সফর চলতি মাস অথবা আগামী মাসের মধ্যে হতে পারে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা) অস্ত্র কেনার একটি বিস্তারিত তালিকা প্রস্তুত করেছে ইউক্রেন।
সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিতে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন জেলেনস্কি। সেখানে তিনি ৯০ বিলিয়ন ডলারের সম্ভাব্য চুক্তি প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে রাশিয়ার আগ্রাসনের জবাব দিতে ইউক্রেনের পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।
জেলেনস্কি জানান, আলোচনায় দুটি বড় প্রকল্প সামনে এসেছে—একটি হলো ‘মেগা ডিল’ নামে বৃহৎ অস্ত্র ক্রয়চুক্তি, অপরটি ‘ড্রোন ডিল’। ইতোমধ্যে ড্রোন চুক্তি নিয়ে প্রযুক্তিগত দল কাজ শুরু করেছে। এ চুক্তি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইউক্রেন থেকেই ড্রোন কিনবে।
প্রায় তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ইউক্রেন নিজস্ব ড্রোন শিল্প গড়ে তুলেছে এবং বর্তমানে ব্যাপক হারে ড্রোন উৎপাদন করছে। তবে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে উৎপাদন আরও সম্প্রসারণ সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য পশ্চিমা মিত্রদের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে দেশটি। বিশেষ করে আকাশ প্রতিরক্ষায় পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে জেলেনস্কি সরকার।
ইতোমধ্যে ইসরায়েল থেকে পাওয়া একটি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনে মোতায়েন করা হয়েছে। শিগগিরই আরও দুটি প্যাট্রিয়ট সিস্টেম আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা থেকে শহর ও সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া এখন তার সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়া ইউক্রেনে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে। জবাবে ইউক্রেনও রাশিয়ার জ্বালানি ও তেল স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে। জেলেনস্কির ইঙ্গিত, এর বাইরেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।