
রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়ানো এক নতুন বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে, যেখানে বিএনপির সাম্প্রতিক বক্তব্যের সুর আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে বলে মত দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি দাবি করেছেন, নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়ে বিএনপির বক্তব্য এবং আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সাম্প্রতিক মন্তব্যের মধ্যে বিশেষ মিল রয়েছে।
শুক্রবার বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম বলেন, বিএনপি যদি সত্যিই নিরপেক্ষ সরকারের পক্ষে থাকে, তাহলে তাদের বক্তব্যের সাথে আওয়ামী লীগের অবস্থানের এতটা মিল থাকার কথা নয়। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাও বলেছেন, বর্তমান সরকার অবৈধ ও অনির্বাচিত। এটি বিএনপির বক্তব্যের সাথে অনেকটাই মিলে যায়।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, বিএনপি এক-এগারোর প্রসঙ্গটি বারবার সামনে আনছে। অথচ তারা নিজেরাই এক সময় এ ধরনের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছিল। এখন তাদের কথার ধরন এমন যে, তারা যেন এক-এগারোর মতো একটি নতুন পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
অন্যদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “আমরা এক-এগারোর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা এখন আমাদের ভারতের দোসর বানাতে চায়, এটি কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কথা বললে কি সেটা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়ে যায়? আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। অথচ আমাদের প্রতিটি বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।”
নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “বর্তমান সরকার নিরপেক্ষতার জন্য কাজ করছে। বিএনপি যদি সত্যিই নিরপেক্ষতা চায়, তাহলে তাদের উচিত সুস্পষ্টভাবে বলা, ঠিক কী ধরনের নিরপেক্ষতা তারা প্রত্যাশা করে।
অন্যদিকে বিএনপি বলছে, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে হলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ভোট হওয়া জরুরি। সরকার যদি সত্যিই নিরপেক্ষ হয়, তবে সেটির প্রমাণ জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে।
রাজনীতিতে বক্তব্যের সুর পরিবর্তন হওয়া নতুন কিছু নয়। তবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্যের মিলকে কেন্দ্র করে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আপাতত বিতর্ক চলমান রয়েছে, তবে আসন্ন নির্বাচনের সময় এসব বিষয় আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।