প্রতিদিনের সূর্যোদয় এক নতুন দিনের বার্তা বয়ে আনে। কিন্তু ১৬ ডিসেম্বরের সূর্যোদয় বাঙালির জন্য বিশেষ। এই দিনে স্বাধীনতার গৌরবগাঁথা, দেশপ্রেম এবং আত্মত্যাগের অমলিন স্মৃতি হৃদয়ে জাগ্রত হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনেই বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ।
এই বছর, বিজয়ের ৫৩তম বর্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিদেশি অতিথি পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস হোর্তা। দেশব্যাপী বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে আসে লাখো মানুষ।
শুধু দেশে নয়, বিদেশেও বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস উদযাপিত হয়। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজন করে বিশেষ অনুষ্ঠানের।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ মানুষ শহীদ হন। দুই লাখের বেশি মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আসে স্বাধীনতা। কিন্তু আজও দেশের মানুষ বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখে। এই বিজয় দিবসে বৈষম্যের বিরুদ্ধে নতুন আন্দোলনের ডাক শোনা যায়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের অবসানের পর দায়িত্ব নিয়েছে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। স্বাধীনতার চেতনা অনুযায়ী সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এই সরকার।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে। জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিজয় দিবস উপলক্ষে নানা আয়োজন হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আনসারের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা সকলকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে।
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে প্রতিজ্ঞা করা হয় এক বৈষম্যহীন ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার। ২০২৪ সালের গণ-আন্দোলনের শহীদদের আত্মত্যাগও সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন শক্তি জোগাবে।