বাংলাদেশের বিশ্ব ইজতেমার আয়োজনে দীর্ঘদিনের অরাজনৈতিক ভাবমূর্তির পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সংঘর্ষ ও বিভক্তির পরিপ্রেক্ষিতে দুই পক্ষের আলাদা ইজতেমা আয়োজন এই বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।
ইজতেমার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মাওলানা জুবায়ের অনুসারী ও মাওলানা সাদ কান্দালভির অনুসারীদের মধ্যে যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে, তার ফলে ২০১৭ সাল থেকে ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবারও ইজতেমা দুই দফায় হবে। প্রথম দফায় ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে জুবায়েরপন্থিদের ইজতেমা শেষ হবে, এরপর ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি সাদপন্থিরা তাদের আয়োজন করবে।
জুবায়েরপন্থিরা সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ করার দাবি জানালেও, সাদপন্থিরা এটিকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নেতারা ইজতেমার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন, যা তাবলিগের মূল চেতনার পরিপন্থী।
তাবলিগের নেতৃত্বের দিক থেকে মূল বিরোধ দেখা দেয় মাওলানা সাদ কান্দালভির ব্যাখ্যা নিয়ে। তিনি বলেন, ধর্মীয় প্রচার অর্থের বিনিময়ে করা উচিত নয় এবং মাদ্রাসার আলেমদের সাধারণ মুসল্লিদের সঙ্গে মসজিদে নামাজ আদায় করা উচিত। কওমি আলেমদের অনেকেই এই বক্তব্যকে আপত্তিকর মনে করেন এবং তাকে বয়কটের ঘোষণা দেন।
সাদপন্থিদের দাবি, কিছু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নেতারা সংঘাতে উসকানি দিচ্ছেন এবং তাবলিগ জামাতের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় হস্তক্ষেপ করছেন। অন্যদিকে, জুবায়েরপন্থিরা বলছেন, সাদ কান্দালভির বিতর্কিত বক্তব্যই এই বিভেদের মূল কারণ।
সরকার এবার শর্তসাপেক্ষে সাদপন্থিদের ইজতেমার অনুমতি দিলেও, ভবিষ্যতে তাদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হতে পারে।