ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই হামলা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট উদাহরণ। এতে একাধিক রাজনৈতিক দল তাদের বক্তব্য ও বিবৃতিতে নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, "এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত। সহকারী হাইকমিশনের ভেতরে প্রবেশ করে বাংলাদেশের পতাকা নামিয়ে সেটিতে আগুন দেওয়া এবং ভাঙচুর ভিয়েনা কনভেনশনের সরাসরি লঙ্ঘন। ভারত সরকারকে এ ঘটনায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।"
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, "কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ার পর ভারত বাংলাদেশ নিয়ে মন্তব্য করার অধিকার রাখে না।" তিনি এই ঘটনাকে দুই দেশের শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করার চক্রান্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, "বাংলাদেশ শান্তির দেশ। এখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ নিরাপদ। যারা এ ধরনের হামলা করে, তারা দেশের মঙ্গল চায় না।"
বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) একযোগে এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে। তারা বিদ্বেষমূলক রাজনীতি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, "উভয় দেশের জনগণকে সচেতন থাকতে হবে, যাতে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির চক্রান্ত সফল না হয়।"
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, "জাতীয় পতাকা অবমাননা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে আঘাত করেছে। এ ধরনের ঘটনা কূটনৈতিক সম্পর্কে ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।"
আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) রাজধানীতে একটি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। মিছিল শেষে তারা বলেন, "সাম্প্রতিক হামলা ভারতের একটি বিশেষ মহলের পরিকল্পিত উস্কানি। বাংলাদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ ধরনের আগ্রাসন প্রতিহত করবে।"
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। তাদের বক্তব্যে ভারতের ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, "এ ধরনের হামলা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। উভয় দেশের সরকারকে আরও সতর্ক পদক্ষেপ নিতে হবে।"
সব রাজনৈতিক দলই একমত যে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে ভারতের সরকারকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে—একতাবদ্ধ থেকে দেশের স্বার্থ রক্ষায় সচেষ্ট থাকার।