২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। নতুন এই তালিকায় ঈদুল ফিতরে ৫ দিন, ঈদুল আজহায় ৬ দিন এবং শারদীয় দুর্গাপূজায় ২ দিনের ছুটি নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ছুটির তালিকায় আগের বছরের তুলনায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে, বিশেষ করে দুই ঈদের ছুটি বৃদ্ধি করা হয়েছে। সরকারি কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষের জন্য এটি একটি স্বস্তির খবর।
২০২৫ সালে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি পাঁচ দিন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি দিন সাধারণ ছুটি এবং বাকী চার দিন নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকবে। সাধারণত ঈদের আগের দিন, ঈদের দিন, এবং ঈদের পরের দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়, তবে নতুন প্রস্তাবনায় এর সঙ্গে আরও দু’দিন ছুটি যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে দেশের মানুষ পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে আরও দীর্ঘ সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন।
২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকায় ঈদুল আজহায় ছয় দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি দিন সাধারণ ছুটি এবং বাকী পাঁচ দিন নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকবে। ঈদুল আজহায় পশু কোরবানির পর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে ছুটির দিনগুলো বাড়ানো হয়েছে। এই ছুটি বাড়ানোর ফলে দেশের মানুষ আরাম ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে ২০২৫ সালে দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিজয়া দশমীর দিন সাধারণ ছুটি থাকবে এবং তার আগের নবমীর দিন নির্বাহী আদেশে ছুটি দেওয়া হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজায় কর্মস্থল থেকে ছুটি পাওয়ায় দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষেরা উৎসব উদযাপন করতে পারবেন এবং নিজ নিজ পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারবেন।
সরকারি ছুটির তালিকা প্রণয়ন একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ। বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ধর্মীয় উৎসব এবং সাধারণ মানুষের চাহিদার ভিত্তিতে ছুটির তালিকা প্রস্তুত করা হয়। সরকারি কর্মচারীদের কাজের চাপ এবং ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ছুটির দিনগুলো নির্ধারণ করা হয়। পাশাপাশি, বিশেষ দিনে সরকারি সেবা ব্যবস্থা এবং জরুরি সেবা প্রদান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
ছুটি বাড়ানোর কারণ
বর্তমানে ঈদের ছুটি সাধারণত তিন দিন হলেও, অনেক সময় তা নির্বাহী আদেশে আরও বাড়ানো হয়। এবার এই প্রক্রিয়াকে স্থায়ীভাবে পাঁচ থেকে ছয় দিনে উন্নীত করা হয়েছে, যাতে মানুষ ছুটি পরিকল্পনা আগেই করতে পারেন এবং ভ্রমণ বা অন্যান্য পারিবারিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে সুবিধা পান। দীর্ঘ এই ছুটি দেশের ভ্রমণ ও পর্যটন খাতকেও উৎসাহিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারি ছুটির তালিকা ভবিষ্যতেও দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে সময়োপযোগীভাবে হালনাগাদ করা হবে। মানুষের চাহিদা এবং দেশের কর্মজীবনের মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে এমন ধরনের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে, যাতে কর্মচারীরা আরও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং তাদের ব্যক্তিগত জীবন এবং কর্মজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারেন।
২০২৫ সালের সরকারি ছুটির এই নতুন ব্যবস্থা দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দীর্ঘ ছুটি পরিবার, বন্ধু এবং আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ দেবে এবং বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের মেজাজ আরও আনন্দঘন হয়ে উঠবে। এছাড়া, কর্মজীবী মানুষদের মানসিক বিশ্রাম পাওয়ার সুযোগও থাকছে, যা তাদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।