বাংলা একাডেমিতে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা, যা এবার বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থান আমাদের সামনে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এই তরুণদের আত্মত্যাগ শুধু স্বৈরাচারের পতন ঘটায়নি, বরং নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার পথ সুগম করেছে।
ড. ইউনূস তার বক্তব্যে স্মরণ করেন গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্র-জনতা ও শ্রমিকদের। তিনি বলেন, এই অভ্যুত্থান আমাদের জাতীয় চেতনায় নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে। বরকত, সালাম, রফিক, জব্বারদের আত্মত্যাগের যে ইতিহাস, তা এবার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আলোকে আরও গভীর অর্থ বহন করছে।
এবারের বইমেলায় তরুণদের আঁকা চিত্রকর্মের একটি বিশেষ প্রদর্শনী রাখা হয়েছে, যেখানে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চিত্র ফুটে উঠেছে। ড. ইউনূস বলেন, এই শিল্পকর্মগুলো আমাদের তরুণদের চেতনার বহিঃপ্রকাশ। এগুলো আমাদের ইতিহাসের অংশ, যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একুশ শুধু ভাষার জন্য সংগ্রাম নয়, এটি আমাদের ঐক্য ও পরিচয়ের প্রতীক। জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান জাতিকে নতুন করে ঐক্যবদ্ধ করেছে, যার ফলে আমরা দ্রুত গতিতে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথে এগিয়ে যেতে পারবো।
বইমেলায় অংশ নেওয়া লেখকদের উৎসাহিত করতে ড. ইউনূস প্রস্তাব দেন, "প্রতি বছর বিষয়ভিত্তিক সেরা লেখক ও প্রকাশকদের স্বীকৃতি দিলে সাহিত্য চর্চায় নতুন মাত্রা যোগ হবে।
ড. ইউনূস আরও বলেন, আমরা যদি একুশের চেতনাকে সম্প্রসারিত করি, তাহলে তরুণ উদ্যোক্তা, কৃষক, বিজ্ঞানী, প্রবাসী বাংলাদেশি সবার অবদানের স্বীকৃতি দিতে পারবো। এটি আমাদের জাতীয় ঐক্যকে আরও সুসংহত করবে।
বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।