বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক শান্তি পদক বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আগের সরকার ২০২৪ সালের ২০ মে এই পদক প্রদানের নীতিমালা অনুমোদন করেছিল। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে শান্তি প্রতিষ্ঠা, দারিদ্র্য বিমোচন এবং মানবতার কল্যাণে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতি দুই বছর অন্তর একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এই পুরস্কার দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। পুরস্কার হিসেবে এক লাখ মার্কিন ডলার, ৫০ গ্রাম ওজনের ১৮ ক্যারেট স্বর্ণপদক এবং সম্মাননা সনদ দেওয়ার কথা ছিল।
তবে, নীতিমালা চূড়ান্ত অনুমোদনের পরও এখন পর্যন্ত কাউকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়নি। নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
এই পুরস্কারটি দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রাখা ব্যক্তিদের স্বীকৃতি দেওয়া। তবে, নতুন সরকারের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পুরস্কারটি বাস্তবায়নযোগ্য নয় এবং সরকারের বর্তমান নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, নীতিমালা অনুমোদনের প্রায় ১০ মাস পরও পুরস্কার কার্যকর করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এছাড়া, সরকারি ব্যয়ের যৌক্তিকতা বিবেচনায় রেখে এটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ সিদ্ধান্তের পর রাজনৈতিক মহল ও বিভিন্ন বিশ্লেষকরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এই পদক বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারত। আবার অন্যরা বলছেন, এটি বাস্তবায়ন কঠিন এবং সরকারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর তুলনায় এটি অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, পুরস্কার প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণের প্রক্রিয়াও যথেষ্ট স্পষ্ট ছিল না, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে বাতিলের সিদ্ধান্তের পেছনে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক শান্তি পদক বাতিলের সিদ্ধান্তের ফলে সরকারের নীতি ও ব্যয়ের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। যদিও পুরস্কারটি প্রদান করা হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হতে পারত, তবে বর্তমান বাস্তবতায় এটি না রাখার পক্ষে মত দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।