বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও সমাজ পরিবর্তনে নারীদের ভূমিকা ছিল অগ্রগামী বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি উল্লেখ করেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও সামগ্রিক সংস্কার আন্দোলনে নারীরা সম্মুখ সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে।
জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এই দিনটি বিশ্বব্যাপী নারী অধিকার, সমতা এবং ক্ষমতায়নের বার্তা ছড়িয়ে দিতে উদযাপিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে নারীরা কেবল অংশগ্রহণই করেনি, বরং গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী নারীরা নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে, এবং কয়েকজন নারী আন্দোলন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। আমি তাঁদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।
তিনি আরও বলেন, নারীরা এখন সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা ও ব্যবসাসহ সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীদের অংশগ্রহণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, নারীদের অধিকার ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে সরকারের নানাবিধ উদ্যোগ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: শেল্টার হোম ও আইনি সহায়তা: নির্যাতিত ও অসহায় নারীদের জন্য সুরক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। মহিলা সহায়তা কেন্দ্র: কর্মজীবী নারীদের জন্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। আবাসন সুবিধা: কর্মজীবী নারীদের জন্য নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর্থিক স্বাবলম্বন: নারীদের আত্মকর্মসংস্থানে সহায়তা করতে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নারীরা শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও নিজেদের প্রতিষ্ঠা করছে। তাঁরা বৈশ্বিক পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্রে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করছে।
নারীদের সাফল্যকে স্বীকৃতি দিতে সরকার "অদম্য নারী পুরস্কার" ও "বেগম রোকেয়া পদক" প্রদান করছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে যাবে। নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আরও বেশি সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে জাতির একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।