বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালমনিরহাট জেলা কমিটি ঘোষণার পর থেকেই একের পর এক পদত্যাগের ঘটনা ঘটছে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে ঘোষিত কমিটির তালিকা প্রকাশের পর রাতেই বেশ কয়েকজন সদস্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
কমিটি ঘোষণার পর থেকে যারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন যুগ্ম সদস্য সচিব কামরুজ্জামান সুমন, তানভীরুল ইসলাম, সায়েম আদনান অরকু, জোনায়েদ হোসেন আবির, আব্দুল্লাহ আল নোমান, মাহমুদুল হাসান আবীর, হাসান আল মোহসিন, রবিউল ইসলাম রানা, এবং রুবায়েদ খন্দকার প্রান্ত। ফেসবুকে দেওয়া তাদের স্ট্যাটাস থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পদত্যাগকারীদের অভিযোগ, কমিটি গঠনের সময় আন্দোলনে সক্রিয় ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। বরং যেসব ব্যক্তি আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না, তাদের তদবিরের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন আন্দোলনে যুক্ত থাকা নেতারা ক্ষুব্ধ হয়ে পদত্যাগ করেছেন।
যুগ্ম সদস্য সচিব পদ থেকে পদত্যাগ করা কামরুজ্জামান সুমন বলেন, “কমিটিতে আমার মতো ত্যাগী নেতার নাম না থাকলে সেটি গ্রহণযোগ্য নয়। তাই পদত্যাগ করেছি।” অন্যদিকে, আরেক যুগ্ম সদস্য সচিব তানভীরুল ইসলাম বলেন, “অগণিত সহযোদ্ধার অবমূল্যায়ন করে গঠিত কমিটিতে থাকতে চাই না। স্বদেশ প্রেমে পদ-পদবির প্রয়োজন নেই।”
লালমনিরহাট জেলা কমিটির সদস্য সচিব হামিদুর রহমান জানান, “কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদের সংখ্যা সীমিত। কেন্দ্রীয় কমিটি নিজস্ব বিবেচনায় উপযুক্তদের পদে বসিয়েছে। যারা ফেসবুকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের অনেকের লিখিত পদত্যাগপত্র এখনও জমা পড়েনি।” তিনি আরও বলেন, “১১০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে ১৭/১৮ জনের অনুপস্থিতিতে কাজের ধারাবাহিকতায় কোনো প্রভাব পড়বে না। কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নতুন নেতৃত্বে দেশব্যাপী কমিটি গঠন করেছে। গত ২৪ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেলের স্বাক্ষরিত লালমনিরহাট জেলা কমিটি প্রকাশিত হয়। কমিটিতে শামস্ বিন শাহারিয়ার নাঈমকে আহ্বায়ক, হামিদুর রহমানকে সদস্য সচিব এবং সবুজ মিয়াকে মুখ্য সংগঠক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ফেসবুকে পদত্যাগের স্ট্যাটাস ও লাইভ ভিডিওগুলো ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষত, যারা কমিটিতে অবমূল্যায়নের শিকার হয়েছেন, তাদের বক্তব্য অনেকের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।