আজ ১৬ ডিসেম্বর, বাঙালি জাতির গৌরবের দিন — মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের নাম যুক্ত হয়। আজ বিজয়ের ৫৩ বছর পূর্ণ হলো।
এ বছর বিজয় দিবসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন এক অধ্যায়। বিগত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে দেশব্যাপী উদযাপিত হবে এই বিজয় দিবস। দেশের মানুষ নতুন গণতান্ত্রিক, মানবিক এবং বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার প্রত্যাশায় দিবসটি পালন করছে।
আজ সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, মুক্তিযোদ্ধা এবং সর্বস্তরের জনগণ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নারকীয় হামলা চালায়। এরপর শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার থেকে মেজর জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা বাঙালির মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে আরো দৃঢ় করে তোলে। দীর্ঘ ৯ মাসের সংগ্রামে ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ নারীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে আসে বিজয়।
আজ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব শহরে আলোকসজ্জা এবং দেশাত্মবোধক গানের আয়োজন করা হয়েছে।
বিভিন্ন আয়োজন ও কর্মসূচি: জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, বিশেষ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিজয় মেলা ও শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বঙ্গভবনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা, নৌবাহিনীর জাহাজ পরিদর্শনের সুযোগ, এছাড়া মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র এবং চলচ্চিত্র বিনামূল্যে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই দিনটি কেবল বিজয়ের নয়, বরং বাঙালি জাতির আত্মপরিচয়, সাহসিকতা এবং ঐক্যের প্রতীক। বিজয় দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব হয়েছিল ত্যাগের বিনিময়ে।