বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উন্নয়ন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের নতুন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন। সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান সংস্কার কার্যক্রম, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত্য গঠনের প্রচেষ্টা এবং আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা অর্জনের চেষ্টা চলছে এবং ফেব্রুয়ারির মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, প্রস্তাবিত ঘোষণাপত্রের মূল বিষয়বস্তু হবে ‘ঐক্য’। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সরকার এ ক্ষেত্রে শুধু সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এবং কোনো পক্ষের ওপর কোনো ধারণা চাপিয়ে দেওয়া হবে না।
বৈঠকে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স সাংবাদিকদের আটক এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা সম্পর্কিত কিছু রিপোর্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এর জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সকল নাগরিকের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট এবং মিয়ানমারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করে একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে।
প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রকে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে আরও সমর্থন চান।
বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা হয়। অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের তুলার অন্যতম প্রধান আমদানিকারক। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পোশাক আমদানির আহ্বান জানান, যা উভয় দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।