বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, রাষ্ট্র কর্তৃক আহত আন্দোলনকারীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে অগ্রাধিকারভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও আহতদের আশানুরূপ চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ ও আহতরা আমাদের জাতীয় সম্পদ। তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের সম্পদ হিসেবে নয়, বরং জাতীয় সম্পদ হিসেবে মর্যাদা প্রদান করতে চায়। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আয়োজনে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারীদের স্মৃতিচারণ” শীর্ষক প্রেরণামূলক গণঅভ্যুত্থান-২৪ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে শিক্ষিত জাতি গঠনে অগ্রাধিকার দেবে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিদ্যমান শিক্ষানীতিতে মানবিক গুণাবলি তৈরির চেয়ে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের প্রসার ঘটানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মানুষকে মানবিক ও আদর্শবান করে তোলাই প্রকৃত শিক্ষা।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিভিন্নভাবে নাগরিক অধিকার হরণ করেছে। জামায়াতে ইসলামী গণতান্ত্রিক সব দলের সমন্বয়ে এমন একটি সরকার গঠনের অঙ্গীকার করে, যেখানে কোনো একক ব্যক্তি বা দলের প্রভাব থাকবে না। তিনি বলেন, জাতিকে প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ দিতে এবং নাগরিকদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে এ ধরনের সরকার অপরিহার্য।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, “১৯৪১ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামী ইনসাফ, ন্যায়বিচার ও মানবিক সমাজ গঠনের চেতনা লালন করছে। জনগণ যদি এই চেতনা বাস্তবায়নের সুযোগ দেয়, তবে দেশ একটি কল্যাণকর রাষ্ট্রে পরিণত হবে।”
অনুষ্ঠানে আন্দোলনে আহতদের স্মৃতিচারণ করা হয়। গুলিবিদ্ধ ২ বছরের শিশু রাফসানের মা, পরিবহন শ্রমিক নুরে আলম, ও দোকান কর্মচারী মো. ইউসুফসহ আহতরা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তারা জানান, আমরা কোনো কিছু পাওয়ার আশায় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করিনি। আমাদের লক্ষ্য ছিল একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, শহীদ পরিবার ও আহতদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রমাণ দিয়েছে। ভবিষ্যতে এই সহযোগিতা আরও প্রসারিত হবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত এবং মানবিক রাষ্ট্র গঠনে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ নাগরিকদের প্রতি তিনি আগামী নির্বাচনে ইসলামের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।