বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন ও রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে একটি স্বাধীন প্রতিরক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় মিরপুর ডিওএইচএস-এ "জাস্টিস ফর কমরেডস" আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়।
গত ১৬ বছর ধরে দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে, উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক আনুগত্য নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে অবৈধ বরখাস্ত, অন্যায় বিচার ও সম্পদের অপব্যবহার প্রতিরক্ষা বাহিনীর পেশাদারিত্বকে নষ্ট করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা স্বাধীন প্রতিরক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের আহ্বান জানান। প্রস্তাবিত কমিশনের সম্ভাব্য কাঠামো হতে পারে: সভাপতি: আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। সদস্য: মানবাধিকার কর্মী, শিক্ষক, আইনজ্ঞ, তিন বাহিনীর জ্যেষ্ঠ ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
এই কমিশন তিন ধাপে সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছে:
প্রথম ধাপ: বিচার ও পুনর্বাসন
দ্বিতীয় ধাপ: আইন ও নীতিমালা সংস্কার
তৃতীয় ধাপ: সামরিক বাহিনীর বেসামরিক ব্যবসা থেকে সরিয়ে নেওয়া
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে ইতোমধ্যে বহু আবেদন জমা পড়েছে। তবে এখনো কোনো কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, একটি শক্তিশালী ও স্বাধীন প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তুলতে হলে অবিলম্বে সংস্কার কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
বাংলাদেশের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি পেশাদার ও নিরপেক্ষ প্রতিরক্ষা বাহিনী অপরিহার্য। সামরিক বাহিনীর রাজনৈতিক প্রভাবমুক্তকরণ এবং বিচার ও ন্যায়বিচারের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হলে, দেশ দ্বিতীয় স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল পাবে।