নোয়াখালীর হাতিয়ায় বিএনপির গণসমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান উচ্চারণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড় উঠেছে। রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে শুক্রবার বিকেলে উপজেলার প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল আজিম আদর্শ মহিলা কলেজ মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল আজিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সদস্য খোন্দকার মো. আবুল কালাম এবং সঞ্চালনা করেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইকবাল উদ্দিন রাশেদ।
হাতিয়া পৌরসভা ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আবুল বাসার ফুল মিয়া বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান উচ্চারণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
আবুল বাসার ফুল মিয়া তার বক্তব্যে দাবি করেন, তিনি নিজে এই স্লোগান দেননি। তার পাশের কোনো ব্যক্তি ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, জয় বাংলা স্লোগান আমাদের দুশমন। আমি তারেক জিয়া জিন্দাবাদ বলেছি।
উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন বলেন, মানুষ মাত্রই ভুল করে। আবুল বাসার ভাই ভুলবশত এই স্লোগান উচ্চারণ করে থাকতে পারেন। তবে এটি ইচ্ছাকৃত নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক উপজেলা বিএনপি নেতা দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন-পীড়ন চালিয়েছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের মাধ্যমে। তারা সন্দেহ প্রকাশ করছেন যে, আবুল বাসার আওয়ামী লীগের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে থাকবেন।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান বলেন, বিএনপির কোনো নেতা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে পারেন না। সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে কেউ জড়ালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আবুল বাসারের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই ঘটনা বিএনপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছেন। বিএনপির সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান উচ্চারণের বিষয়টি ভবিষ্যতে দলে কী প্রভাব ফেলবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।