
রামাদান মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ একটি মাস। এ মাসে সঠিকভাবে রোযা পালন করতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েল জানা অত্যাবশ্যক। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েল তুলে ধরা হলো:
সাহরীর গুরুত্ব ও বিধান
সাহরী খাওয়া সুন্নত। যদিও সামান্য পরিমাণ খাবার কিংবা এক ঢোক পানিই সাহরীর সুন্নত আদায়ের জন্য যথেষ্ট। নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা সাহরী খাও, কেননা সাহরীতে বরকত রয়েছে।” (সহীহ মুসলিম)
ইফতারের সময় ও নিয়ম
সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে ইফতার করা মুস্তাহাব। নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যতদিন মানুষ সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে।” (সহীহ বুখারী)
খেজুর ও পানি দ্বারা ইফতার
ইফতার করার জন্য খেজুর খাওয়া উত্তম। যদি খেজুর না থাকে, তবে পানি দ্বারা ইফতার করাও সুন্নত। আনাস (রা.) বলেন, “রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। যদি খেজুর না থাকত, তবে পানি পান করতেন।” (তিরমিযী)
রোযা ভঙ্গের কারণসমূহ
বিড়ি-সিগারেট, হুক্কা ইত্যাদি গ্রহণ করলে রোযা ভেঙে যাবে এবং কাযা ও কাফফারা উভয়ই আদায় করতে হবে।
দাঁত থেকে রক্ত বের হলে এবং তা যদি থুথুর সাথে পেটে চলে যায়, তবে রোযা ভেঙে যাবে।
ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া-দাওয়া করলে রোযা বাতিল হবে। তবে ভুলবশত কেউ যদি খেয়ে ফেলে, তাহলে তার রোযা নষ্ট হবে না। (সহীহ মুসলিম)
অনিচ্ছাকৃত বমি ও স্বপ্নদোষ
অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হলে রোযা নষ্ট হবে না। (জামে তিরমিযী)
স্বপ্নদোষ হলে রোযা ভাঙবে না। নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “তিনটি কারণে রোযা ভঙ্গ হয় না: বমি, শিঙ্গা লাগানো ও স্বপ্নদোষ।” (সুনানে কুবরা, বাইহাকী)
মশা-মাছি গিলে ফেলা ও ধোঁয়া গ্রহণ
অনিচ্ছাকৃতভাবে ধুলোবালি বা ধোঁয়া গিলে ফেললে রোযা নষ্ট হবে না।
অনিচ্ছাকৃতভাবে মশা-মাছি পেটে চলে গেলে রোযার উপর কোনো প্রভাব পড়বে না। (রদ্দুল মুহতার)
রোযা রাখার পর অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
যদি কেউ রোযার নিয়ত করার পর অসুস্থ বা অজ্ঞান হয়ে যায়, তবে তার রোযা নষ্ট হবে না। এটি নফল রোযার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। (সুনানে কুবরা, বাইহাকী)
রামাদান মাসের সঠিক আদায়ের জন্য এসব মাসায়েল জানা জরুরি। রোযার নিয়ম ও বিধান সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান অর্জন করলে আমরা আরও সুচারুভাবে আল্লাহর বিধান মানতে সক্ষম হবো।