Search
Close this search box.

শনিবার- ১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রামাদানের গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েল ও বিধান – পর্ব ৫

রামাদানের গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েল ও বিধান – পর্ব ৫

রোযার আরকান

রোযার দুটি প্রধান রুকন রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে রোযার প্রকৃত অর্থ বাস্তবায়িত হয়:

১। ফজর উদয় হওয়ার পর থেকে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত যাবতীয় রোযা নষ্টকারী জিনিস থেকে বিরত থাকা। মহান আল্লাহ বলেন:

وَكُلُوْا وَاشْرَبُوْا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ، ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِঅর্থঃ তোমরা পানাহার কর, যতক্ষণ পর্যন্ত না কালো সুতা থেকে ফজরের সাদা সুতা তোমাদের নিকট স্পষ্ট হয়ে যায়। অতঃপর তোমরা রাত পর্যন্ত রোযা পূর্ণ কর। (সুরা বাকারা ২:১৮৭)

উক্ত আয়াতে উল্লেখিত “কালো সুতা ও সাদা সুতা” দ্বারা রাতের অন্ধকার ও দিনের আলো বোঝানো হয়েছে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, “রোযা হল পানাহার ও যৌনসংগম থেকে বিরত থাকা।”

২। নিয়ত:
রোযার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ রুকন হল নিয়ত করা। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, “সমস্ত কর্ম নিয়তের উপর নির্ভরশীল এবং মানুষের তাই প্রাপ্য হয় যার সে নিয়ত করে।” (বুখারী, মুসলিম)

ফরয রোযার জন্য নিয়ত করা ওয়াজিব এবং তা রাতের কোনো এক অংশে সম্পন্ন করাই যথেষ্ট। তবে নফল রোযার জন্য দিনের বেলাতেও নিয়ত করা যায় যদি কোনো খাবার পান না করা হয়।

সেহরী বা সাহারী খাওয়া

সেহরী খাওয়া মুস্তাহাব। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন:

تَسَحَّرُوا فَإِنَّ فِي السَّحُورِ بَرَكَةٌ“তোমরা সেহরী খাও, কেননা সেহরীতে বরকত আছে।” (বুখারী, মুসলিম)

সেহরীর বরকত হল:

  • শারীরিক শক্তি প্রদান করে
  • রোযার কষ্ট হালকা করে
  • রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর সুন্নাত পালন হয়
  • ফেরেশতাগণ দোয়া করেন

কি খেলে সেহরী খাওয়া হবে?

সেহরীতে যে কোনো খাবার গ্রহণ করলেই তা আদায় হয়ে যাবে। এমনকি এক ঢোক পানি খেলেও সেহরী আদায় হবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, “আমাদের ও আহলে কিতাবের রোযার মধ্যে পার্থক্য হল সেহরী খাওয়া।” (মুসলিম)

সেহরীর সময়সীমা

সেহরী খাওয়ার শেষ সময় হল ফজরের কিছুক্ষণ পূর্ব পর্যন্ত। তবে আজানের এক-দুই মিনিট আগে সেহরী শেষ করা উত্তম। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ও সাহাবীগণ ফজরের পূর্বে সেহরী খেতেন এবং সালাত আদায়ের মাঝে কুরআনের ৫০ আয়াত তেলাওয়াতের সময় পার হতো। (বুখারী, মুসলিম)

রমাযানের রোযা মুসলমানদের জন্য ফরয একটি ইবাদত। রোযার মূল উদ্দেশ্য হল তাকওয়া অর্জন করা, যা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। তাই আমাদের উচিত রোযার শুদ্ধতা বজায় রাখা, সঠিক নিয়ম অনুসরণ করা এবং ইখলাস ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোযা পালন করা।

আগের পর্ব: রামাদানের গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েল ও বিধান – পর্ব ৪
লেখক: ইবনে আবদুল্লাহ

আরও পড়ুন

সম্পর্কিত আরো খবর

জনপ্রিয়