
ভবিষ্যৎ ঘটনা পূর্বাভাসে মানুষের চেয়ে বেশি দক্ষতা দেখিয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা মেটাকুলাস কাপে অষ্টম স্থান অর্জন করেছে ব্রিটিশ স্টার্টআপ ম্যান্টিক এআই (Mantic AI), যা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন গুগল ডিপমাইন্ডের সাবেক এক গবেষক।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের সামনে রাখা হয় ৬০টি সম্ভাব্য ঘটনার প্রশ্ন। এর মধ্যে ছিল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের দ্বন্দ্ব কিংবা ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব পরিবর্তনের মতো জটিল বিষয়।
বিশেষজ্ঞরা আগে অনুমান করেছিলেন, এআই মানুষের গড় পারফরম্যান্সের সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে। কিন্তু ম্যান্টিক এআই দেখিয়েছে তার দ্বিগুণ—৮০ শতাংশ নির্ভুলতা। ফলে অনেক অভিজ্ঞ মানব পূর্বাভাসকারীও এআই-এর পেছনে পড়ে গেছেন।
মেটাকুলাসের প্রধান নির্বাহী ডেগার তুরান এ সাফল্যকে ‘অভূতপূর্ব’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। অন্যদিকে ম্যান্টিকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা টবি শেভলেনের মতে, ভবিষ্যৎ পূর্বাভাস কেবল তথ্য বিশ্লেষণ নয়, এতে মৌলিক চিন্তাশক্তিও প্রয়োজন। তাঁর দাবি, তাদের মডেল অনেক ক্ষেত্রে মানুষের তুলনায় মৌলিক পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হয়েছে।
ম্যান্টিক এআই বিশেষায়িত পদ্ধতিতে কাজ করে। এটি বিভিন্ন ধরনের কাজ আলাদা করে ওপেনএআই, গুগল এবং ডিপসিকের মতো শীর্ষ মেশিন-লার্নিং মডেলের কাছে পাঠায়। প্রতিটি মডেলকে দেওয়া হয় তাদের দক্ষতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নির্দিষ্ট দায়িত্ব।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই যত বেশি নির্ভুলভাবে ভবিষ্যৎ অনুমান করতে পারছে, ততই এটি আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স (এজিআই)-এর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। গুগল ডিপমাইন্ডের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় ধারণা করা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যেই এজিআই তৈরি হতে পারে।
এজিআই হলো এমন এক ধরণের উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, যা মানুষের মতোই নানা ক্ষেত্রে জ্ঞান বুঝতে, শিখতে ও প্রয়োগ করতে পারবে। যেখানে সাধারণ এআই নির্দিষ্ট কাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ, সেখানে এজিআই হয়ে উঠবে সর্বজনীন বুদ্ধিমত্তা।