
সূর্যেও বৃষ্টি হয়—তবে তা আমাদের মতো জলীয় নয়, বরং আগুনের মতো গরম প্লাজমার বৃষ্টি। বিজ্ঞানীরা এই অগ্নিময় বৃষ্টিকেই বলেন ‘সৌরবৃষ্টি’।
সূর্যের বাইরের স্তর, অর্থাৎ করোনা, সবসময়ই উত্তপ্ত গ্যাস বা প্লাজমায় ভরা থাকে। যখন সূর্যের পৃষ্ঠে বিশাল সৌরশিখা (Solar Flare) তৈরি হয়, তখন এই প্লাজমা চুম্বকীয় শক্তির লুপে আটকে যায়। পরে তাপমাত্রা কমে গেলে প্লাজমা ঘনীভূত হয়ে ভারী ফোঁটার মতো নিচে নেমে আসে—এই দৃশ্যই আসলে সৌরবৃষ্টি।
দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা এই অদ্ভুত ঘটনার রহস্য উন্মোচনে কাজ করছেন। আগের মডেলগুলোতে সূর্যের বায়ুমণ্ডলকে স্থির একটি মিশ্রণ হিসেবে দেখা হতো, যা সৌরবৃষ্টির গতিশীলতা ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ ছিল।
সম্প্রতি হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লুক ফুশিমি বেনাবিতজ এক নতুন মডেল তৈরি করেছেন। তাঁর মতে, সূর্যের প্লাজমায় থাকা উপাদান—যেমন লোহা, সিলিকন ও ম্যাগনেশিয়াম—পরিবর্তিত হলে প্লাজমার ঠান্ডা হওয়ার হারও বদলে যায়। ফলে দ্রুত ঘনীভবন ঘটে এবং সূর্যে শুরু হয় আগুনের মতো প্লাজমা বৃষ্টি।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, সূর্যশিখার সময় এই উত্তপ্ত গ্যাস চুম্বকীয় পথে উপরে উঠে গিয়ে ঠান্ডা হয়ে আবার নিচে নামে। তাপমাত্রা কমে গেলে তৈরি হয় ঘন ও ভারী ফোঁটা, যাকে বলা হয় সৌরবৃষ্টি (Solar Rain)।
এই নতুন গবেষণা সূর্যের জটিল আবহাওয়া ও তার গতিশীলতা বোঝার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।