
সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এই অভিযানে ২০০ জন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক অংশ নিয়েছেন। এ কার্যক্রম আজ ও আগামীকাল চলবে, যার মাধ্যমে দ্বীপের দূষণ কমিয়ে পরিবেশগত ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে।
পরিবেশ রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে গত দুই মাসে বিপুল পরিমাণ ময়লা-আবর্জনা ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক সংগ্রহ করা হয়েছে। নদী ও সমুদ্র দূষণ রোধে জাহাজ ঘাট থেকে ২৪১ কেজি প্লাস্টিক ও ৮৭ কেজি পলিথিন সরিয়ে ফেলা হয়। প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোরের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন থেকে ১৪.৩ মেট্রিক টন এবং কক্সবাজার থেকে ৬৭.৩ মেট্রিক টন প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।
দ্বীপে অতিরিক্ত পর্যটনের কারণে পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তাই, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২,০০০ পর্যটকের সীমা নির্ধারণ করা হয়। এই সময়ের মধ্যে গড়ে দৈনিক ১,৬৯৪ জন পর্যটক দ্বীপ পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া, অতিরিক্ত যাত্রী বহনের দায়ে বেশ কয়েকটি জাহাজকে সতর্ক করা হয় এবং দুইটি জাহাজকে জরিমানা করা হয়।
পর্যটকদের সচেতন করতে দ্বীপে তথ্যসংবলিত সাইনবোর্ড ও গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে। সমুদ্রসৈকতের পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির (BMC) অধীনে ১০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ৬ জন লাইফগার্ড দায়িত্ব পালন করছেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সেন্টমার্টিনের পরিবেশ রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চাই।
তিনি আরও জানান, পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এ বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করবে, যাতে পরিবেশগত সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং পর্যটন নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হলে পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় থাকবে।