
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন ঠেকাতে ‘না ভোট’ পুনরায় চালু, পলাতকদের অযোগ্য ঘোষণা এবং সশস্ত্র বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবসহ জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫–এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এসব প্রস্তাবের কথা জানান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে প্রার্থীদের আয়কর রিটার্ন, দেশে–বিদেশে আয়ের উৎস ও সম্পত্তির বিবরণী জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মিথ্যা তথ্য দিলে মেয়াদ চলাকালে সংসদ সদস্যপদ বাতিল করা যাবে। নিরাপত্তা জামানতও ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত খসড়ায় বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ফলে নির্বাচনকালে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার ও কোস্টগার্ডের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে কাজ করতে পারবে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে। এতে পলাতক ব্যক্তিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন এড়াতে ‘না ভোট’ চালু এবং সশস্ত্র বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, “আমরা এটি (খসড়া আইন) চূড়ান্ত করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।”
একক প্রার্থী থাকলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবর্তে ‘না ভোট’ প্রবর্তনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। খসড়া অনুযায়ী, যদি প্রার্থীর চেয়ে ‘না ভোট’ বেশি হয়, তবে নতুন তফসিল ঘোষণা করে পুনঃনির্বাচন হবে। তবে পরবর্তী নির্বাচনে আর ‘না ভোট’ বিকল্প রাখা হবে না। প্রিসাইডিং অফিসারের ক্ষমতা বাড়িয়ে ভোটগ্রহণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, কারচুপি হলে বা ব্যালট বাক্স অবৈধভাবে নষ্ট বা সরিয়ে ফেলা হলে তিনি ভোট বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন বলেও খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ছাড়া জোট–সমর্থিত প্রার্থীর জন্য জোটের প্রতীক নয়, বরং নিজ নিজ দলের প্রতীক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। পলাতক ব্যক্তি সম্পর্কে সানাউল্লাহ বলেন, যেকোনো আদালতে পলাতক ঘোষিত ব্যক্তি নির্বাচনের জন্য বা (সংসদের) সদস্য হওয়ার জন্য অযোগ্য হবেন। আবার সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি বা পরিচালনা কমিটির পদে থাকলে প্রার্থীতা গ্রহণযোগ্য হবে না।