Search
Close this search box.

বুধবার- ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অকালমৃত্যু বলতে কিছু নেই

অকালমৃত্যু বলতে কিছু নেই

মৃত্যু থেকে পালিয়ে থাকার কোনো অবকাশ নেই। মৃত্যু আসবেই। নেই চিরদিন বেঁচে থাকার কোনো উপায় । আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, ‘তোমরা যে মৃত্যু থেকে পালাতে চাও, সে মৃত্যুর সামনাসামনি হতেই হবে। তোমাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে অদৃশ্য ও  দৃশ্যের  পরিজ্ঞাতা আল্লাহর কাছে আর তোমাদের জানিয়ে দেওয়া হবে যা তোমরা করতে ।’ (সুরা জুমআ, আয়াত: ৮)

আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই; সুউচ্চ সুদৃঢ় দুর্গে থাকলেও, আর তাদের ভালেো হলে তারা বলে এ আল্লাহর কাছ থেকে আর তাদের কোনো মন্দ্ হলে তারা বলে এ তোমার জন্য বলো সবই আল্লাহর কাছ থেকে  ।’ এ –সম্প্রদায়ের  কী হয়েছে যে এরা একেবারেই কোনো কথা বোঝেনা। (সুরা নিসা, আয়াত: ৭৮)

মৃত্যু ঘটবে। তবে কার কখন মৃত্যু হবে, কীভাবে মৃত্যু ঘটবে—তা কারও জানা নেই। হাদিসে আছে, ‘মানুষের চোখের দুই ভ্রুরুর মাঝখানে মৃত্যুর তারিখ লেখা রয়েছে। কিন্তু তা কোনো মানুষই দেখতে পায় না।’ (আল হাদিস)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘কখন কেয়ামত হবে; তা কেবল আল্লাহই জানেন। তিনিই বৃষ্টিবর্ষণ করেন আর তিনি জানেন যা  জরায়ুতে আছে। কেউ জানে না আগামীকাল সে কী অর্জন  করবে এবং কেউ জানে না কোন দেশে তার মৃত্যু হবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সব বিষয়ই তার জানা।’ (সুরা লোকমান, আয়াত: ৩৪)

মৃত্যু হবে। মরণ আসবেই। তবে অকালমৃত্যু বলতে কিছু নেই। আমরা অনেক সময় অনেকের ক্ষেত্রেই বলে থাকি, তার অকালমৃত্যু ঘটেছে। ইসলামের দৃষ্টিতে ‘অকালমৃত্যু’ বলতে কোনো কিছু নেই। কারণ, সবার মৃত্যুর দিনক্ষণ-তারিখ সবকিছু পূর্বেই নির্ধারিত। নির্ধারিত সময়েই মৃত্যুবরণ করেন সবাই। নির্দিষ্ট সময়ের একমুহূর্ত আগে বা পরে কারও মৃত্যু হয় না। একেকজন মানুষ বা প্রাণী একেক সময় মৃত্যুবরণ করলেও প্রত্যেকের মৃত্যুর সময় ও তারিখ নির্দিষ্ট।

কোরআনে এসেছে, সাবধানীরা থাকবে ঝরণাভরা জান্নাতে ।  (সুরা হিজর, আয়াত: ৪৫)

মৃত্যু বা জগৎ রূপান্তরের দুটি অবস্থা রয়েছে। এক. ভালো মৃত্যু। দুই. মন্দ মৃত্যু। কারও মৃত্যু হবে সহজ-সুন্দর এবং কারও মৃত্যু হবে কঠিন-ভয়াবহ। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তুমি দেখতে পেলে  মত্যুর সময় ফেরেশতরা  অবিশ্বাসীদের  মুখে  ও পিঠে আঘাত করে তাদের প্রান  কেড়ে নিচ্ছে আর  বলছে তোমরা দহনযন্ত্রণা ভোগ করো।’ (সুরা আনফাল, আয়াত: ৫০)

আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ করেছেন,  যাদের মৃত্যু ঘটায় ফেরেশতারা  ওরা পবিত্র থাকা অবস্থায় তাদেরকে ফেরেশতারা বলকে তোমাদের ওপর শান্তি । তোমরা যা করতে তার জন্য তোমরা জান্নাতে জান্নাতে প্রবেশ করো।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৩২)

যখন মৃত্যু উপস্থিত হবে, তখন মানুষের অন্তরের চোখ খুলে যাবে। সে তখন ভালো কাজ সম্পাদন করার জন্য আরও সময় কামনা করবে। কিন্তু তাকে আর সময় দেওয়া হবে না।

সামান্য  মুসিবতে পড়লে বলে উঠি, ‘আয় মাবুদ, আমাকে উঠিয়ে নাও। মরণ দাও আমাকে।’ এমনটা বলা একেবারেই উচিত না। মৃত্যু প্রত্যাশা করাকে নিষেধ করা হয়েছে ইসলামে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘বিপদের কারণে তোমাদের কেউ যেন কিছুতেই মৃত্যু প্রত্যাশা না করে। কারও যদি মৃত্যু প্রত্যাশা করতেই হয়, তাহলে যেন বলে, হে আল্লাহ! আমাকে বাঁচিয়ে রাখো, যতক্ষণ আমার জন্য জীবন কল্যাণকর এবং আমাকে মৃত্যু দাও, যখন আমার জন্য মৃত্যু কল্যাণকর।’ (বুখারি)।

আরও পড়ুন

সম্পর্কিত আরো খবর

জনপ্রিয়