
রামাদান মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনস্বীকার্য। এই মাসে রোযা রাখা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের জন্য ফরজ। তবে কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে ইসলাম রোযা না রাখার অনুমতি দিয়েছে। আজকের আলোচনায় আমরা তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
যাদের জন্য রোযা না রাখার অনুমতি রয়েছে
১. মুসাফির (যাত্রারত ব্যক্তি)
মুসাফির অবস্থায় রোযা না রাখার সুযোগ রয়েছে। তবে যদি অতিরিক্ত কষ্ট না হয়, তাহলে রোযা রাখা উত্তম। তবে যদি সফরজনিত ক্লান্তি ও কষ্ট বেশি হয়, তাহলে রোযা না রেখে পরে কাযা করা উত্তম।
মহানবী (সা.) এর নির্দেশনা: আনাস (রা.) বলেন, “যে রোযা রাখেনি সে অবকাশ গ্রহণ করল, আর যে রোযা রাখল সে উত্তম কাজ করল।” (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা)
মুসাফির যদি রোযা রেখে সফর শুরু করে, তবে তা ভাঙা জায়েয নয়। তবে যদি প্রাণনাশের আশঙ্কা থাকে, তাহলে ভাঙতে পারবে এবং পরে কাযা করতে হবে।
সফরের কারণে রোযা না রাখলে, যদি দিন শেষ হওয়ার আগেই মুকীম হয়ে যায়, তাহলে রোযার সম্মানার্থে পানাহার থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। তবে পরবর্তী সময়ে কাযা করতে হবে।
২. অসুস্থ ব্যক্তি
যে ব্যক্তি রোযার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়বে বা তার রোগ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, তার জন্য রোযা ভাঙার অনুমতি রয়েছে। তবে এটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য একজন অভিজ্ঞ দ্বীনদার চিকিৎসকের মতামত নেওয়া উত্তম।
৩. গর্ভবতী নারী
যদি গর্ভবতী নারী মনে করেন যে রোযা রাখার কারণে তার নিজের বা অনাগত সন্তানের স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে, তাহলে তিনি রোযা না রেখে পরে তা কাযা করতে পারবেন। ইসলাম এই বিষয়ে সহজতা রেখেছে।
৪. দুগ্ধদানকারী মা
যদি দুগ্ধদানকারী মা রোযা রাখলে তার দুধের উৎপাদন কমে যায় এবং তার শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে তিনি রোযা না রেখে পরে কাযা করতে পারেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, “আল্লাহ মুসাফিরের জন্য রোযা ও নামাযের বিধান শিথিল করেছেন, আর গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারীদের জন্যও রোযার বিধান শিথিল করেছেন।” (তিরমিযী)
রামাদান মাসে রোযা রাখা ফরজ হলেও, ইসলাম আমাদের জন্য সহজতা এনেছে। যারা বিশেষ পরিস্থিতিতে রোযা রাখতে অসমর্থ, তারা পরে তা কাযা করে নিতে পারেন। পরবর্তী পর্বে আরও গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েল নিয়ে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
১ম পর্ব পড়ুন: রামাদানের গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েল – পর্ব ১