
বর্তমানে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে যাত্রীরা ঘরে বসেই নিজের পছন্দ মতো আসন দেখে ট্রেনের টিকিট কাটার সুযোগ পাচ্ছেন। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘রেল সেবা’ অ্যাপে প্রথমে জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে নিবন্ধন করতে হয়। এরপর নির্ধারিত স্থান বা স্টেশন, তারিখ ও ট্রেনের বগি নির্বাচন করতে হয়। সবশেষ ধাপে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড কিংবা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহার করে টিকিটের মূল্য পরিশোধ করতে হয়।
পেমেন্ট সম্পন্ন হওয়ার পর যাত্রী ই-টিকিট প্রিন্ট করতে পারেন অথবা সরাসরি মোবাইল ফোন থেকে সংগ্রহ করে ভ্রমণের কাজে ব্যবহার করতে পারেন।
বর্তমানে বাসের টিকিট কাটতেও যাত্রীদের আর লাইনে দাঁড়ায়ে ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে না।এখন ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরে বসেই খুব সহজেই নিজের পছন্দ মতো আসন নির্বাচন থেকে শুরু করে ভাড়া পরিশোধের করা যায় খুব সহজ ও অল্প সময়ের মধ্যেই। টিকিটের মূল্য পরিশোধ করা যায় মোবাইল ব্যাংকিং বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। পেমেন্ট শেষ হলে টিকিটের সফট কপি যাত্রীর ই-মেইল বা মোবাইলে এসএমএস আকারে পৌঁছে যায়।
এর ফলে বিশেষ করে ঈদের মতো ভ্রমণের মৌসুমের ভোগান্তি কমেছে, সেই সঙ্গে যাত্রীদের ভ্রমণ নিরাপত্তাও আরও নিশ্চিত হয়েছে।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরীণ কিংবা আন্তর্জাতিক বিমানের টিকিট সংগ্রহ করাও সহজ হয়ে গেছে। কয়েক মিনিটেই টিকিট কেনা সম্ভব হচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ছাড়াও শেয়ার ট্রিপ, গোজায়ান কিংবা ফ্লাইট এক্সপার্টের মতো ওয়েবসাইট ও অ্যাপ ব্যবহার করে।
প্রথমে যাত্রীকে গন্তব্য, তারিখ, ফ্লাইট ও যাত্রীর তথ্য দিতে হয়। এরপর ডিজিটাল পেমেন্ট— যেমন মোবাইল ব্যাংকিং, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টিকিটের মূল্য পরিশোধ করা যায়।
পেমেন্ট সম্পন্ন হলে ই-মেইলে পাঠানো ই-টিকিট সরাসরি মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করা যায়, ফলে যাত্রীকে আলাদা করে প্রিন্ট নেওয়ার ঝামেলায় পড়তে হয় না।
তবে এ নিয়ম কেবল ডলার বা বিদেশি মুদ্রার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। স্থানীয় মুদ্রা (টাকা) ব্যবহার করে পরিশোধ করলে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। ফলে টাকায় মূল্য পরিশোধ করে যাত্রীরা নির্দ্বিধায় বড় অঙ্কের টিকিট কিনতে পারেন।
অনলাইনে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী একটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিদেশি মুদ্রায় (ডলার) ৩০০ ডলারের বেশি পরিশোধ করা যাবে না। অর্থাৎ, টিকিটসহ যেকোনো অনলাইন কেনাকাটা বা ফি বাবদ বাংলাদেশ থেকে বসে ৩০০ ডলারের বেশি ডলারে পরিশোধ করা সম্ভব নয়।
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে টিকিট কেনার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো নিরাপত্তা এবং ঝামেলামুক্ত প্রক্রিয়া।যাত্রীরা ঘরে বসেই কিংবা যেকোনো স্থান থেকে সুবিধামতো সময়ে টিকিট দেখে নিতে পারেন। প্রয়োজন হলে টিকিট বাতিল করার সুযোগও রয়েছে। বিশেষ করে নারী ও একক যাত্রীদের জন্য এটি অনেক বেশি নিরাপদ এবং স্বস্তিদায়ক। কারণ আগের মতো আর কাউন্টারের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করতে হয় না। ফলে ভ্রমণ এখন হয়ে উঠেছে আরও সহজ ও নিশ্চিন্ত।
অনলাইন টিকিট সেবায় যাত্রীরা সহজেই সুবিধা পেলেও ঢাকা-কক্সবাজার, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রামের মতো জনপ্রিয় রুটে সবসময় টিকিট পাওয়া যায় না। বিশেষ করে সপ্তাহান্তে ও ছুটির দিনে মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে অধিকাংশ আসন বুক হয়ে যায়।
যাত্রীদের অভিযোগ, একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ ব্যবহারকারী লগইন করলে অনেক সময় সিস্টেমে চাপ পড়ে, ফলে কিছু যাত্রী টিকিট থেকে বঞ্চিত হন। তবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, তাদের সক্ষমতা কোটি যাত্রী সেবা দেওয়ার মতো, আর এজন্য নিয়মিত সিস্টেম আপগ্রেড ও মানোন্নয়ন করা হয়।